গর্ভাধান কি? ও গর্ভধান সম্বন্ধীয় কথা

গর্ভাধান অর্থ জরায়ুতে শুক্র স্থাপন হিন্দুধর্মের ষোড়শ সংস্কারের প্রথম সংস্কার। এটি স্ত্রীর দ্বিতীয় বিবাহরূপ সংস্কার। গর্ভাধান সংস্কারে স্ত্রীর প্রথম রজোদর্শনের ষোলো দিনের মধ্যে স্বামী পবিত্র হয়ে সন্ধ্যায় সূর্যার্ঘ্য প্রদান করে যথাবিধি বহ্নিস্থাপনের পর পঞ্চগব্য দ্বারা স্ত্রীকে শোধন করে সন্তান উৎপাদনার্থ গ্রহণ করেন। বিবাহিত অর্থাৎ দাম্পত্য জীবনের মূল লক্ষ্য হল সুস্থ- সবল , গুণবান, যশস্বী, ধার্মিক, সুশীল সন্তান প্রাপ্তি । স্ত্রী পুরুষের স্বাভাবিক গঠন এমন যে তারা পরস্পর মিলিত হলে স্ত্রী.গর্ভবতী হয় । কিন্তু এই মিলনের জন্য তিথি নক্ষত্র, দিন ক্ষণ, শুভ ও অশুভ বিচার করে দিন নির্ধারণ করা হয় তবে তার সুপ্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে।

ধৰ্ম্মশাঙ্গের মতে রজোদর্শনের প্রথম তিনরাত্রির পর গুতবার, তিথি ও নক্ষত্রে গর্ভাধান সংস্কার করবেন । কিন্তু গোভিলের মতে ঋতুমতী স্ত্রীর শোণিতস্রাব বন্ধ হইলে সঙ্গমকাল উক্ত হয়েছে, কোন রাত্রি বা দিনের সংখ্যা নাই । এতে স্পষ্টই বোঝা যায় যে, ঋতুর পর যতদিন পর্য্যন্ত শোণিতপাত হয়, ততদিন সঙ্গম বা গর্ভাধান করা উচিত নয়, করলে সস্তানের অনিষ্ট হয় । অপর ধৰ্ম্মশাস্ত্রকারগণ প্রায়শ তিনরাত্রির পরে রক্তপতন বন্ধ হয় বলে থাকেন। প্রথম ঋতুতে গর্ভাধান সংস্কার করিলে তাহার পর আর কোন ঋতুতে সংস্কারের আবগুক হয় না। দেবল বলেন— “মকৃচ্চ সংস্কৃত নারী সৰ্ব্ব গর্ভেযু সংস্কৃত ” – অর্থাৎ রমণীগণের এক বার সংস্কার হইলে সকল গর্ভেরই সংস্কার হয়। অতএব গর্ভাধান, পুংসবন ও সীমস্তোন্নয়ন একবারই কর্তব্য । গোভিলখৃহস্থত্রে গর্ভাধানপ্রণালী এইরূপ লিখিত আছে – “দক্ষিণেন পাণিনেপস্তমভিমৃশেদ বিষ্ণুর্যোনিং কন্নয়ত্বিতেতিয়চর্চা গৰ্ভং ধেহি লিনীবালাতি চ সমাপার্চেী সম্ভবতঃ ॥” ( গেভিলগুহাস্থত্র ৯,১০৫ )

গার্হ্যসূত্র মতে, এই সংস্কারের সূচনায় স্ত্রী যথাবিধি সুসজ্জিত হন এবং স্বামী সৃষ্টি সংক্রান্ত বৈদিক স্তোত্র উচ্চারণ করতে করতে দেবগণকে আহ্বান জানান, যাতে তারা তার স্ত্রীকে গর্ভধারণে সহায়তা করেন। অতঃপর ঋতুর প্রথম তিন দিনের পর শুভদিনে কোনরূপ দোষ বা প্রতিবন্ধক না থাকলে গর্ভাধান করবেন। গর্ভাধানের দিবসে সায়ং সন্ধ্যা অতীত হইলে পতি পবিত্র ভাবে ও পবিত্র , বেশে “নমো বিবস্বতে বিষ্ণু” ইত্যাদি মন্থদ্বারা স্বৰ্য্যাৰ্থ প্রদান করিবে । “পরে বিষ্ণুৰ্যেনিং কল্পৰ্কীয়তু ত্বষ্টারূপাণি পিংশভু । আসিঞ্চতু প্রজাপতি ধাত৷ গৰ্ভং দধাতু তে ” মন্ত্রত্র ১.৪।৬) এই মন্ত্রটি ও “গৰ্ভং ধেহি সিনাবালি গৰ্ভং ধেহি সরস্ব শ্ৰী । গৰ্ভন্তে অশ্বিনৈ দেব বাপত্তাং পুষ্করত্রজে ।” মন্ত্ররা ১৪ ৭ । ) এই মন্ত্ৰটি উচ্চারণ করে। দক্ষিণ হস্তদ্বারা পত্নীর গোপনাঙ্গ স্পর্শ করবেন এবং তৎপরে উভয়ে সঙ্গত হইবে । একেই গর্ভাধান সংস্কার বলে । স্বামী পুরুষের উৎপাদন ক্ষমতা সংক্রান্ত স্তোত্র উচ্চারণ করতে করতে স্ত্রীর দেহে নিজ শরীর ঘর্ষণ করবেন। আলিঙ্গনের পর পূষণের নিকট প্রার্থনার মাধ্যমে গর্ভস্থাপনের কাজ শুরু হয়। স্বামী স্ত্রীর দক্ষিণ স্কন্ধের উপর থেকে ঝুঁকে তার স্ত্রীর বক্ষ স্পর্শ করেন “হে সুবিন্যস্ত কেশধারী, তোমার হৃদয় বাস করে স্বর্গে, বাস করে চন্দ্রে, আমি তাহাকে জানি, তাহা আমাকে জানুক। আমি যেন শত শরৎ বাঁচিয়া থাকি।” পদ্ধতি প্রণেতা ভবদেবভট্টের মতে যোনিদেশ স্পর্শ করে উপরি কোন কোন মতে বিবাহের ন্যায় গর্ভাধানের দিনে ও আভ্যুদায়িক শ্রাদ্ধ করতে হয়।

(১) ছন্দোগপরিশিষ্টের মতে বিবাহাদি গর্ভাধানান্ত সংস্কারের মধ্যে একটি শ্ৰাদ্ধ করলেই চলতে পারে, প্রত্যেক কৰ্ম্মের প্রথমেই আভ্যুদায়িক শ্ৰাদ্ধ করতে হয় না।
(২) লৌকিক প্রথা অনুসারে অথবা বিলুপ্ত শাখীয় বিধি অনুসারে গর্ভাশয়ের শুদ্ধির জন্য মন্ত্ৰপূত পঞ্চগয্য তক্ষণ করবার নিয়ম আছে ।

স্মৃতি শাস্ত্রে লিখিত আছে-

নিষেকাদ্ বৈজিকং চৈনো গার্ভিকং চাপমৃজ্যতে ।
ক্ষেত্রসংস্কার সিদ্ধিশ্চ গর্ভাধানফলং স্মৃতম্ ।।

অর্থাৎ – বিধি বিধান মতো এবং সংস্কার মতো গর্ভাধান থেকে শুভগুণ সম্পন্ন সুযোগ্য সন্তান সৃষ্ট হয় । আর এই সংস্কার থেকেই বীর্য ও গর্ভ সংক্রান্ত পাপের নাশ হয়। দোষ নষ্ট হয় । ক্ষেত্র সংস্কার হয় । এগুলিই হল গর্ভাধান সংস্কারের ফল বা পরিণতি ।

নানা সমীক্ষা ও গবেষোণার দ্বারা এটা প্রত্যক্ষ করা হয়েছে গর্ভাধান কালে স্ত্রী- পুরুষ যেমন ভাবনায় ভাবিত থাকেন, বা তাদের মানসিক অবস্থা যেমন থাকে তা তাদের রজঃ বীর্যে প্রতিফলিত হয়। সেই থেকে সৃষ্ট সন্তানের ওপরে সেই ভাবনা পড়ে।

সুশ্রত সংহিতায় লেখা আছে –

আহারাচার চেষ্টা ভিয়াদৃশোভি সমন্বিতৌ ।
স্ত্রীপুংসৌ সমুপেয়াতাং তয়োঃ পুত্রোত্তপি তাদৃশঃ ।।
( সুশ্রত সংহিতা / শরীর ২/৪৩/৫০ )

অর্থাৎ- নর নারী যেমন আহার ব্যবহার বা প্রচেষ্টায় মিলিত হয়ে পরস্পর সহবাস করে তাদের পুত্র সন্তানও তেমনি স্বভাব প্রাপ্ত হয় ।

ভরদ্ধাজের মতে রজস্বল স্ত্রী প্রথমদিনে চাণ্ডালী, দ্বিতীয় দিনে ব্রহ্মঘাতিনী ও তৃতীয়দিনে রঞ্জকীর ন্যায় অপবিত্র ও অস্পৃশু হয় । চতুৰ্থদিবসে শুদ্ধিলাভ করে । চতুৰ্থদিন হইতে যোলদিন পর্য্যন্ত গর্ভাধানের যোগ্যকাল । বুহজন্নাতকের নিষেকাধায়ে শিথিত আছে যে, গর্ভের প্রথমমাসে শুক্র ৭ শোণিত মিশ্রিত হয়, ইহাকে কললা ! বস্থা বলে, এই সময়ের অধিপতি শুক্র । দ্বিতীয়মাসে গর্ভ অপেক্ষাকৃত কঠিন হয়, তাহার অধিপতি মঙ্গল । তৃতীয় মাসে হস্তপদাদি উৎপন্ন হইতে থাকে, তাহার অধিপতি বৃহস্পতি । | চতুর্থমাসে অস্তির সঞ্চার হয়, অধিপতি সুর্য্য । পঞ্চমমাসে | চৰ্ম্মের উৎপত্তি, অধিপতি চন্দ্র, ষষ্ঠে রোম জন্মে, তাহার অধিপতি শনি, সপ্তমে চেতনার প্রাদুর্ভাব হয় অধিপতি বুধ ; অষ্টমে ভোজন শক্তি উৎপন্ন হয়, লগ্নাধিপতিই তাহার অধিপতি ; নবমমাসে উদ্বেগ জন্মে, সেই সময়ের অধিপতি চন্দ্র ও দশমমাসে প্রসব হয়, তাহার অধিপতি স্বৰ্য্য । যে সকল গ্রহের উল্লেখ করা হইল, গর্ভাধানকালে ইহায় মধ্যে কোন গ্রন্থপীড়িত থাকিলে সেই গ্রহের মাসে গর্ভপাতাদি ঘটিয়া থাকে। আর যদি ইহারা বলবান থাকে, তবে সেই সেই মাসে গর্ভের পুষ্টি হয়। সুশ্রুতের মতে অতিশয় বুদ্ধ, চিররোগিণী বা অন্য কোনরূপ বিকারযুক্ত রমণীর গর্ভাধান করা একান্ত নিষিদ্ধ এবং অতিশয় বৃদ্ধ চিরয়োগগ্ৰস্ত বা অপর কোন প্রকার বিকারযুক্ত পুরুষের পক্ষেও গর্ভাধান করা উচিত নহে ।

ঋতুকালের চতুর্থ দিনে স্নান করে পবিত্র হয়ে শ্রদ্ধা ভরে সাত্বিক ভাবে ঈশ্বর, মহাপুরুষ দিগকে প্রণাম করে তাহার পর স্বামীর সাথে সহবাস করলে সুশীল, ধার্মিক, উত্তম সন্তান লাভ হয় ।

রমনীগণের ঋতুর পর ষোড়শ দিন পর্যন্ত গর্ভধারণযোগ্য ক্ষমতা থাকে, ইহাই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু সুসন্তানকামী ও সুস্থ শরীরাভিলাষী ব্যক্তি ঋতুর ১ম চারি দিবস ১১শ ও ১৩শ দিবস একেবারেই বর্জন করবে। এই ৬ দিন বাদে বাকি ১০ দিনের মধ্যে উত্তরোত্তর যত বেশী দিন গত করে গর্ভাধান করবে সন্তান ততই ভাল হবে। অর্থ্যাৎ সন্তান বলবান ও ধনবান, সৌভাগ্যশালী ও আয়ুষ্মান হবে।

১। ঋতুর প্রথম চার দিন, ১১তম ও ১৩তম দিন সহবাস করবেন না।
২। এই ছয় দিন বাদ দিয়ে বাকি দশ দিনের মধ্যে গর্ভাধান করবেন।
৩। এই দশ দিনের মধ্যেও যত বেশি দিন পরে গর্ভধারণ করবেন, সন্তান তত বেশি সুস্থ ও বলবান হবে ও তার পরমায়ু বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ এই ১০ দিন সময়কালের মধ্যে দশম দিন সবচেয়ে কার্যকর। তারপর ক্রমান্বয়ে নবম দিন, অষ্টম দিন ইত্যাদি।
৪। অবশ্য উল্লেখিত এই দশ দিনের মধ্যেও অমাবস্যা, পূর্ণিমা, চতুর্দশী, অষ্টমী ও সংক্রান্তির দিনগুলিতে সহবাস করবেন না। কারণ এই দিনগুলি পুরুষ ও স্ত্রীর শুক্র ও শনি দুষ্ট থাকে। যুগ্ম রাত্ৰিতে গর্ভাধান করিলে কথা এবং অযুগ্ম রাত্রিতে গর্ভাধান করিলে পুত্ৰ হয়।
৫। জ্যেষ্ঠ, মূলা, মধা, অশ্লেষা, রেবতী, কৃত্তিক, অশ্বিনী, উত্তরাষাঢ়া, উত্তরভাদ্রপদ ও উত্তরফাল্গুনীলক্ষত্রে গর্ভাধান করিবে না। হস্ত। শ্রবণ, পুনর্বসু ও মৃগশিরা * কয়ট নক্ষত্ৰকে পুংনক্ষত্র বলে, ইহার গর্ভাধানকার্যে শুভ। গর্ভাধান কার্যে রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার এবং বুধ, মিথুন, কর্কট, সিংহ, কণ্ঠা, তুলা, ধল্প ও মীন লগ্ন প্রশস্ত ।
৬। রাত্রির প্রথম প্রহরে গর্ভধারণ করলে, সেই গর্ভস্থ সন্তান রুগ্ন ও স্বল্প আয়ুর হয়। রাত্রির দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রহর গর্ভধারণের জন্য খুব একটা ভাল সময় নয়।
৭। চতুর্থ প্রহরে গর্ভধারণ করলে, সন্তান দীর্ঘায়ু ও নীরোগ হয়, পুত্র বা কন্যা সর্ববিষয়ে ভাল হয়।
৮। চতুর্থ প্রহরে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে খুবই উপযুক্ত সময় ও ভাল সময়। কিন্তু ৪র্থ প্রহর বলে ভোর বেলা বা শেষ রাত্রে কেহ গর্ভাধান করবে না। ৩য় প্রহর অতীত হলে ৪র্থ প্রহরের প্রারম্ভে গর্ভাধান করতে হবে।
৯। পঞ্চপর্বে গর্ভাধান নিষিদ্ধ।
১০। সোমবার, বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার রাত্রে সহবাস করলে খুব ভাল। মঙ্গলবার রাত্রে সহবাস না করাই ভাল।
১১। সকাল, সন্ধ্যা এবং দ্বিপ্রহরে সহবাস হানি কারক।
১২। আপনি সন্তান লাভের চিন্তা তখনই করবেন, যখন আপনার শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ থাকবে এবং মনের ভিতর কোনও রূপ খারাপ চিন্তা থাকবে না এবং পেট খালি থাকবে না। তখনই সহবাস করবেন।
১৩। পায়খানা, প্রস্রাব, খিদে ও পিপাসার্ত থাকা অবস্থায় সহবাস করা উচিত নয়।
১৪। যখন সন্তান গর্ভে আসবে, তখন ধর্ম চিন্তা ও সৎ চিন্তা করলে, সন্তান ধার্মিক ও সুখী হয়।
১৫। গর্ভবতী রাগ, হিংসা, মিথ্যা কথা বলা প্রভৃতি অন্যায় আচরণ এবং লোভ করলে গর্ভস্থ সন্তান সেই সমস্ত খারাপ গুণ নিয়ে জন্মায়।
১৬। গর্ভাবস্থায় দিবা নিদ্রা, উপবাস, সহবাস এবং রাত্রি জাগরণ পরিত্যগ করা উচিত।
১৭। রজঃস্বলা অবস্থায় সহবাস করা উচিত নয়। এই সময়ে সহবাস করে গর্ভধারণ হলে এই সমস্ত সন্তান স্বল্পায়ু ও অসুস্থ হয়।
১৮। গর্ভের চতুর্থ মাসে, গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ ও প্রতঙ্গ ও চৈতন্যের প্রকাশ পায়। এই সময় মা যে ধরনের বিদ্যাচর্চা করবে, সন্তান সেই ধরনেরই গুণ নিয়ে জন্মাবে।

রাত ১২ টা থেকে ভোর ৩ টের মধ্যে সহবাসের ফলে যে সন্তান জন্ম হয়- সে ভক্ত হয় । অর্থাৎ ধার্মিক হয় । ঋতুর চতুর্থ, ষষ্ঠ, অষ্টম, দশম, দ্বাদশ, পঞ্চম, সপ্তম, নবম, একাদশ রাত্রে সহবাস অতি উত্তম।

একদশী, দ্বাদশী বা কোন ব্রতের আগে বা ব্রতের দিন বা ব্রতের পরের দিন সহবাস করলে সন্তান অসুর হয়ে জন্মায়। অমাবস্যা, পূর্ণিমা, চতুর্দশী, রবিবার, সংক্রান্তি, অষ্টমী , গ্রহণ, বারবেলা, কালবেলা, রাক্ষসীবেলা, শণিবার, মঙ্গলবার, পূজা পর্বের দিন সহবাসে উৎপন্ন সন্তান রাক্ষস ও দুঃখী হয়। সকালে, সন্ধ্যায়, দুপুরে সহবাস নিষিদ্ধ।

দৈত্যমাতা দিতি জোর করে কশ্যপ মুনিকে প্রাতঃকালে সহবাসে বাধ্য করলে তাহাদিগের হিরন্যক্ষ – হিরন্যকশ্যপ নামক দুই অসুর পুত্র ও হোলিকা নামক এক আসুরী কন্যা জন্মায়। কেকসী সন্ধ্যাকালে বিশ্রবা মুনিকে সহবাসে বাধ্য করলে তাদের সন্তান রাবণ রাক্ষস হয়। সুতরাং ঐ সময়ে সহবাস নিষিদ্ধ ।

অল্প কথায় গর্ভাধান একটি পবিত্র কর্ম। শুদ্ধ বস্ত্রে, শুদ্ধ শয্যায়, শুদ্ধ চিত্তে সহবাসে লিপ্ত হতে হয় তবেই সুশীল, ধার্মিক, সুকুমার সুকুমারী পুত্র বা কন্যা সন্তান লাভ হয় । ক্লান্ত, চিন্তিত, ভয়ার্ত, পায়খানা- প্রস্রাবের বেগ , ক্ষুধা, পিপাসা , মানসিক প্রতিকূলতার সময় সহবাস নিষিদ্ধ । গর্ভধারণের সময় ধর্ম চিন্তা করলে সন্তান ধার্মিক হয় ।

গর্ভাধানের আগে এই মন্ত্র পড়তে হয়-

গর্ভং ধেহি সেনাবালি গর্ভং ধেহি প্রথুষ টুকে ।
গর্ভং তে অশ্বিনী দেবাবাধাতাং পুষ্কর স্রজৌ ।।

অর্থাৎ- সেনাবালি দেবি! এবং হে বিস্তৃত প্রথুষটুকা দেবী, তুমি এই স্ত্রীকে গর্ভধারণের সামর্থ্য দাও ও তাকে পুষ্ট করো। কমল মালায় অশ্বিনীকুমার ভাতৃদ্বয় তার গর্ভকে পুষ্ট করুন ।

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.