গণেশের যে রূপের পূজা করলে সুফল মিলবে বা সমস্যার সমাধান হয়!

সিদ্ধিদাতা গনেশের প্রায় ৩৫ টি রূপ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম এবং সবথেকে শক্তিশালী রূপ হল এই পঞ্চমুখি বিনায়ক অবতার। “পঞ্চমুখ” কথার অর্থ হল পাঁচটি মুখ। এই পাঁচটি মুখের বিভিন্ন অর্থ রয়েছে যা আমাদের ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। প্রসঙ্গত, এই পাঁচটি কোষ হল যথাক্রমে- অনামায়া কোষ, প্রণমায়া কোষ, মনোমায়া কোষ, বিগ্মমায়া কোষ এবং আনন্দমায়া কোষ। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী অনামায়া কোষ বলতে আমাদের শরীরের বাইরের অংশটিকে বোঝানো হয়ে থাকে।

প্রণমায়া কোষ হল আমাদের দেহের ভেতরের পজেটিভ শক্তি। মনোমায়া কোষ বলতে বোঝায় মানসিক শক্তিকে। বিগ্নময়া কোষ বলতে আমাদের সচেতনতাকে বোঝানো হয়ে থাকে। আর সব শেষে আনন্দমায়া কোষ হল স্পিরিচুয়াল পাওয়ার, যাকে অনেকে “কসমিক ব্লেস” বলেও অনেকে চিনে থাকেন। এই পঞ্চমুখী মূর্তি বাড়িতে রাখলে প্রচুর সুফল পাওয়া যায়। এই পঞ্চমুখি গনেশজির মূর্তি বাড়িতে রাখলে বিশেষ সুফল পাওয়া যায়। তা নিম্নে আলোচনা করা হল –

কর্মজীবনে সমস্ত সমস্যা দূরীভূত হয়: পাঁচ মুখী গনেশজীর মুর্তি অফিসের টেবিলে রাখুন। এর ফলে আপনার চারপাশে পজেটিভ শক্তির প্রাধান্য বাড়বে। তার প্রভাবে মানসিক অশান্তি যেমন দূর হয়, তেমনি প্রতিপক্ষদের নানাবিধ ক্ষতি করার আশঙ্কাও যায় কমে। আপনার সমস্ত মানসিক দুশ্চিন্তা দূরিভূত হয়।

পারিবারিক সমস্যা থেকে মুক্তি:  বাড়ির পূর্ব দিকে পাঁচ মুখী গনেশের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করুন যা শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। প্রতিদিন গনেশজীর পূজো করলে বাড়ির মধ্যে পজিটিভ শক্তির পাদুর্ভাব বাড়বে এর ফলে বাড়ির সমস্ত সমস্যা ও কলহ দূরিভূত হবে। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে হলে পঞ্চমুখি গনেশজির নিত্য পূজো করুন।

যে কোনও বাঁধা কেটে যায়: কর্ম জীবন, সংসার জীবন ও দৈনন্দিন জীবনে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কোনও কোনও সময় এই বাঁধা এমন রূপ নেয় যে জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠতে সময় লাগে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সুখ-শান্তি সব দূরে পালায়। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে পঞ্চমুখি গনেশের আরাধনা করুন। এর ফলে এই সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

মিরাকেল ঘটে চোখের সামনে: আজ আমরা আধুনিকতার স্পর্শ পেয়েছি নিজেকে উন্নত করেছি নিজের মত করে। এই পরিস্থিতিতে আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করি। কিন্তু ঈশ্বরই পারে সমস্ত বাধা দূরীভূত করে মিরাকেল ঘটাতে। তাই তো বলা যায় চর্ম চক্ষে যদি মিরাকেল দেখতে চান, তাহলে আজই বাড়িতে পঞ্চমুখি গণেশ ঠাকুরের ছবি এনে রাখতে ভুলবেন না যেন।

যে কোনও বিপদ কেটে যায় চোখের পলকে: জীবনের পথ চলতে হলে মানুষকে অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে হলে পঞ্চমুখী গনেশজীর মুর্তি বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করুন এবং নিত্য দেবের আরাধনা করুন। এর ফলে সমস্ত বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। জীবনে যত বড়ই বিপদ আসুক না কেন, পঞ্চমুখী গণেশের পুজো করলে সব বিপদ দূরে সরে যাবে।

যে কোনও নতুন কাজে সাফল্য আসবে: এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে কোনও নতুন কাজ শুরু করার আগে যদি ‘ওম গাম গনপাতায়ে নমহঃ,’ এই মন্ত্রটিও পাঠ করতে করতে বাপ্পার এই বিশেষ রূপের আরাধনা করা যায়, তাহলে সেই কাজে সফলতা আসে চোখের পলকে। পঞ্চমুখী গণেশের পুজো করলে জীবনে যে কোনও নতুন কাজে সাফল্য আসবে।

সৌভাগ্য সব সময়ের সঙ্গী হবে: আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে গুড্ লাককে নিত্য সঙ্গী করতে হলে প্রত্যহ পঞ্চমুখী গনেশজীর পূজো করুন। কারণ এমনটা করলে গৃহস্তের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে গুড লাক্ সঙ্গ নিতে সময় লাগে না। আর এমনটা যখন হয়, তখন জীবনের ছবিটা যে নিমেষে বদলে যায়, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে! এই মূর্তির পুজো করলে গুডলাক প্রত্যেকে দিনের সঙ্গী হয়ে উঠবে।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি: বৈবাহিক জীবনকে সুখ ও শান্তিতে ভরিয়ে তুলতে হলে পঞ্চমুখি গনেশজির পূজো করুন। তাই তো বলি বন্ধু, ভালবাসার মানুষটির সঙ্গে যদি আনন্দে থাকতে চান, তাহলে প্রতি বুধবার বাক্রাতুন্ডা গণেশ মন্ত্রটি কম করে ১০৮ বার পাঠ করতে করতে করতে বাপ্পার আরাধনা করতে ভুলবেন না যেন। গণেশের এই মূর্তির পুজো করলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের উন্নতি হয় এবং দু’জনের মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

রোগ কাছে ঘেঁষবে না: শাস্ত্র মতে পঞ্চমুখি গণেশ ঠাকুরের কপালে সিঁদুর লাগিয়ে বাপ্পার আরাধনা করলে দেবের আশীর্বাদে গৃহস্থের অন্দরে এত মাত্রায় পজেটিভ শক্তির বিকাশ ঘটে যে শরীরে বাসা বেঁধে থাকা ছোট-বড় নানা রোগ ব্যাধি দূরে পালায়। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া সুখ-শান্তিও ফিরে আসে। পাঁচমুখী গণেশের মূর্তি পুজো করলে কোনও রোগ সহজে কাছে ঘেঁসতে পারবে না।

চরম অর্থনৈতির সমৃদ্ধির স্বাদ মিলবে: অনেকের মতো আপনিও নিশ্চয় বড়লোক হতে চান? তাহলে প্রতি বুধবার সকাল সকাল উঠে স্নান সেরে হলুদ রঙের জামা পরে পঞ্চমুখি গণেশ ঠাকুরের ছবি বা মূর্তির সামনে একটা প্রাদীপ জ্বালাতে হবে। সঙ্গে তাঁর কপালে সিঁদুর লাগিয়ে ‘সিন্ধুরন শ্বভূম রক্তবিন্দু শুভদন কামদন চাউ সি সিন্ধুরন প্রতিঘরেয়তমঃ’, এই মন্ত্রটি জপ করতে হবে। এর পর বাক্রাতুন্ডা গণেশ মন্ত্র পাঠ করে শেষ করতে হবে পুজো। এইভাবে প্রতি বুধবার দেবের আরাধনা করলে দেখবেন অনেক অনেক টাকায় পকেট ভরে উঠতে সময় লাগবে না।

আনন্দবাজার

দেবীপক্ষলাইভ

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.