আপনার পছন্দের রঙ অনুসারে যেরকম আপনার ব্যক্তিত্ত্ব!

রঙ আমাদের মানসিক পরিবর্তনের জন্যও কাজ করে। আমাদের চোখে কিছু রঙ খুব উগ্র ও কিছু রঙ খুব শান্ত হিসাবে ধরা পড়ে। শান্ত রঙের সান্নিধ্যে থাকলে আমাদের মেজাজও শান্ত থাকে। কিন্তু যদি বেশ কিছুক্ষণ উগ্র রঙের সান্নিধ্যে থাকা যায় তাহলে মেজাজ এমনিতেই গরম হয়ে যেতে বাধ্য। রঙের প্রভাবেই এটা হয়।

সূর্যের রশ্মি ও রামধনুর রঙিন ছটা চিরকালই সৌন্দর্যের এক অসাধারণ প্রতিফলন। এই রকম রঙের খেলা যে কতটা দৃষ্টি নন্দন তা আমরা সকলেই জানি। যুগ যুগ ধরে রামধনুর সাতটি রং মানুষের কাছে এক বিরল অভিজ্ঞতা প্রদান করে আসছে।

প্রকৃতপক্ষে গ্রহ জগতের সঙ্গে পার্থিব জগতের এক আশ্চর্য সেতু বন্ধন ঘটায় রামধনু। এই সেতু বন্ধনের মধ্যমেই আমাদের জীবনে শাসনের ক্ষমতা প্রবেশ করে। প্রকৃতপক্ষে সূর্যের কিরণ ও প্রকাশের গ্রহশক্তি কাজ করে।

সূর্যের রশ্মির রং মানুষ, পশু, পাখি ইত্যাদির মন ও হৃদয়ে প্রভাব সৃষ্টি করে। সব রং সবার ভালো লাগে না। মানুষের শরীর ও মনে রঙের প্রভাব সম্পর্কে কয়েকটি কথা এখানে বলা দরকার। মানুষ যেসব রং ভালোবাসে ও ব্যবহার করে তার থেকে কিছু প্রভাব সৃষ্টি হয়।

এমনই নানা বৈচিত্র্যময় অবস্থান রঙ নিয়ে সারা দুনিয়াতেই। যেমন আমাদের রামধনুতে সাতটি রঙের বৈচিত্র্য, কিন্তু চৈনিক রামধনুতে মাত্র পাঁচটি রঙ — লাল, হলুদ, সবুজ, নীল ও বেগুনী। আকাশী ও কমলা রঙদুটি এখানে অদৃশ্য।

অনেক সংস্কৃতির মধ্যেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের ঘটনাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভারতীয়, চীনা ও মায়া সভ্যতার অধিবাসীগণ মহাকাশ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পার্থিব ঘটনাগুলির ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য এই বিষয়ের চর্চা এবং উন্নয়ন সাধন করেছিলেন।

পশ্চিমে, জ্যোতিষশাস্ত্র প্রায়ই একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের ব্যাখ্যা করার জন্য এবং তার জন্মের সময় সূর্য, চন্দ্র, এবং অন্যান্য জ্যোতিষ্কগুলির অবস্থানের উপর ভিত্তি করে তার জীবনের ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য ব্যবহৃত হত।

জ্যোতিষশাস্ত্র অতি প্রাচীন এবং এটি বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন সভ্যতার মানবগোষ্ঠির দ্বারা চর্চিত, পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হয়েছে। তাই কোন একটি বিশেষ সময়কে জ্যোতিষশাস্ত্রের সৃষ্টিকাল হিসেবে চিহ্নিত করা যুক্তিযুক্ত নয়।

জ্যোতিষের বারোটি রাশিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বারোটি আলাদা আলাদা রঙে। এই চিহ্নিতকরণের যে লক্ষ্যণীয় বিষয় সেটি হলো দুটি রঙের মিশ্রণকে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দেওয়া। যেমন মেষকে অর্পণ করা হয়েছে লালরঙ, মিথুনকে কমলা, আর মেষ ও মিথুনের মধ্যবর্তী রাশি বৃষকে অর্পণ করা হয়েছে লাল মিশ্রিত কমলা।

একইভাবে কর্কট, সিংহ ও কন্যাকে অর্পিত রঙ কমলা মিশ্রিত হলুদ, হলুদ এবং হলুদ মিশ্রিত সবুজ। তুলা, বৃশ্চিক, ধনু, মকর, কুম্ভ ও মীন এই ছয়টি রাশির জন্য নির্ধারিত রঙ হল যথাক্রমে সবুজ, টার্কুইজ, নীল, আকাশি, বাদামী এবং বাদামী মিশ্রিত লাল।

জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, মানুষের স্বাস্থ্য ও মনের উপর রঙের প্রভাব যথেষ্ট। ধর্মীয় বিভিন্ন কার্যেও রঙের বিভিন্ন প্রভাব রয়েছে। সূর্যের রশ্মির সাতটি রং-এর সংমিশ্রণ। মানব জীবনে নানান প্রভাব সৃষ্টি করে এই সাত রং।

পছন্দের রং দেখে যে কোনও মানুষের সম্পর্কেই অনেক আজানা কথা বুঝে যাওয়া সম্ভব। চরিত্র মানুষের এক অমূল্য সম্পদ। যিনি চরিত্রবান তিনি সমাজে যে কোনও বিরাট সম্পদশালীর চেয়ে বেশি সম্মান পেয়ে থাকেন।

চরিত্র মানুষকে দান করে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। রামধনুর রশ্মিগুলি আমাদের শরীর ও মনকে প্রভাবিত করে। রামধনুর লাল রঙ সৌভাগ্য ও মাঙ্গলিক কাজের প্রতীক। লাল রঙ তেজস্বীতা, শৌর্য বীর্য ও বলবক্তাকে ব্যক্ত করে। তাই লাল রঙ সমৃদ্ধির প্রকাশ। গেরুয়া রঙ আধ্যাত্মিক ভাবের প্রকাশ। ঠিক একইভাবে পছন্দের রঙ অনুযায়ী জেনে নিন তার ব্যক্তিত্ব

রামধনু বা ইন্দ্রধনু (Rainbow) কি: হল একটি দৃশ্যমান ধনুকাকৃতি আলোর রেখা যা বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত জলকণায় সূর্যালোকের প্রতিফলন এবং প্রতিসরণের ফলে ঘটিত হয়। সাধারণত বৃষ্টির পর আকাশে সূর্যের বিপরীত দিকে রামধনু দেখা যায়। রংধনুতে সাতটি রঙের সমাহার দেখা যায়। দেখতে ধনুকের মতো বাঁকা হওয়ায় এটির নাম রামধনু।

যেভাবে তৈরি হয় এই রামধনু: বৃষ্টির কণা বা জলীয় বাষ্প-মিশ্রিত বাতাসের মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো যাবার সময় আলোর প্রতিসরণের কারণে বর্ণালীর সৃষ্টি হয়। এই বর্ণালীতে আলো সাতটি রঙে ভাগ হয়ে যায়। এই সাতটি রঙ হচ্ছে বেগুনী (violet), নীল (indigo), আকাশি (blue), সবুজ (green), হলুদ (yellow), কমলা (orange) ও লাল (red); বাংলাতে এই রংগুলোকে তাদের আদ্যক্ষর নিয়ে সংক্ষেপে বলা হয়: বেনীআসহকলা আর ইংরেজিতে VIBGYOR. এই সাতটি রঙের আলোর ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কারণে এদের বেঁকে যাওয়ার পরিমাণে তারতম্য দেখা যায়।

যেমন লাল রঙের আলোকরশ্মি ৪২° কোণে বাঁকা হয়ে যায়। অন্যদিকে বেগুনী রঙের আলোকরশ্মি ৪০° কোণে বাঁকা হয়ে যায়। অন্যান্য রঙের আলোক রশ্মি ৪০° থেকে ৪২°’র মধ্যেকার বিভিন্ন কোণে বাঁকা হয়। এই কারণে রামধনুর রঙগুলোকে একটি নির্দিষ্ট সারিতে সবসময় দেখা যায়।

প্রাথমিক উজ্জ্বল রামধনুর একটু উপরে কম উজ্জ্বল আরেকটি গৌণ রামধনু দেখা যায়, যাতে রংগুলি বিপরীত পরিক্রমে থাকে। এই দুই ধনুর মধ্যবর্তী আকাশ (আলেক্সান্ডারের গাঢ় অঞ্চল) বাকি আকাশের থেকে একটু অন্ধকার হয়, তবে ভালো করে লক্ষ না করলে এই তারতম্য নজর এড়িয়ে যেতে পারে।

বেগুনি রং– যাঁর বেগুনি রং পছন্দ তিনি সর্বদা হাসিখুসি ও অত্যন্ত মিশুখ প্রকৃতির হয়ে থাকেন। সামাজিক হওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়!

নীল রং– তিনটি নীল রঙের মধ্যে যাঁর মাঝারি নীল পছন্দ তাঁরা কঠোর পরিশ্রমী ও নতুন কাজের প্রতি উদ্যোগী হন। তবে এদের অনেকেই স্বার্থপর স্বভাবের মনে করলেও এরা নিজেদের জীবনে উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন। যারা গাঢ় নীল রঙ পছন্দ করেন তারা অপরের চোখে স্বার্থপর কিন্তু নিজেদের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পায়। আবার যারা আসমানি রঙ পছন্দ করেন তারা পরিপূর্ণতার জন্য সংগ্রামী মনোভাবের পরিচায়ক।

আকাশী রং– যাঁরা আকাশী রং পছন্দ করেন তাঁরা অত্যন্ত রাগী প্রকৃতির ব্যক্তিত্ব হন।

সবুজ রং– যাঁরা সবুজ রং পছন্দ করেন তাঁরা অপরের উপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। এবং অন্যদের কাছে সুপরিচিত হওয়ার গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করে।

হলুদ রং– যাঁরা হলুদ রং পছন্দ করেন তাঁদের অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। প্রতিযোগিতায় অন্যদের তুলনায় শ্রেষ্ঠত্ব লাভের ইচ্ছা।

কমলা রং– যাঁরা কমলা রং পছন্দ করেন তাঁরা অত্যন্ত ত্যাগী, জ্ঞানপিপাসু ও গাম্ভীর্যপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হন। সামাজিকভাবে সকলকে নিয়ে চলার প্রচেষ্টা।

লাল রং– যাঁরা লাল রং পছন্দ করেন তাঁরা স্বভাবগতভাবেই অত্যন্ত সাহসী, ভোগী, অনুভূতিপ্রবণ ও স্পষ্টভাষী হয়ে থাকেন।

ব্যক্তিত্ত্ব নির্ভর আরো কয়েকটি রঙের বর্ণনা দেওয়া হলঃ

কালো রং– যাঁরা কালো পছন্দ করেন তাঁরা অত্যন্ত অপরিণামদর্শী। বেআইনি কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। কখনও কখনও পরিণতির কথা না ভেবেই বিভিন্ন কার্যকলাপে লিপ্ত হতে চায়! সেই সঙ্গে বেআইনি কাজকর্ম থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন।

বাদামী রং– যাঁরা বাদামী রং পছন্ত করেন তাঁরা বিপরীত রঙের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকেন।

গেরুয়া রং– অপরের চোখে স্বার্থপর কিন্তু নিজেদের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পায়।

চকোলেট রং– বিপরীত লিঙ্গের প্রতি শ্রদ্ধা, সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং অন্য স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে যৌন-আকাঙ্ক্ষা তীব্র।

error: Content is protected !! Without permission do not copy the content. We will sue you if you copy the content without permission.